ই-পাসপোর্ট - Passport
পাসপোর্ট - Pasport
আপনারা সবাই জানেন যে বাংলাদেশে পাসপোর্ট এর সিস্টেম চালু আছে। কিন্তু অনেকেই হয়তো বা এটা জানিনা যে, সাধারণ জনগণের জন্য সবুজ পাসপোর্ট থাকলেও অন্যান্যদের জন্য আরও দুটি কালারের পাসপোর্ট চালু রয়েছে।
পাসপোর্ট এর অর্থ কি?
এটি নাগরিকদের জন্য সরকার কর্তৃক একটি আন্তর্জাতিক ভ্রমণ নথি। এটি ব্যবহার করে ভ্রমণকারীরা নিরাপদে একবিমানবন্দর থেকে অন্য বিমানবন্দর যাতায়াত করতে পারে। এটা একজন নাগরিকের পরিচয় বহন করে এবং তার জাতীয়তা কে মজবুত করে। এই পাসপোর্টে সাধারণত বাহকের জন্ম তারিখ নাম-ঠিকানা ছবি স্বাক্ষর ইত্যাদি তাকে চিহ্নিত করার জন্য দেওয়া থাকে। যার কারণে যেকোনো আইনি লোক পাসপোর্টটি দেখলেই তাকে সনাক্ত করতে পারে খুব সহজেই।
পাসপোর্ট কত প্রকার ও কি কি
বাংলাদেশে পাসপোর্ট প্রধানত তিন প্রকার।
- সবুজ পাসপোর্ট
- নীল পাসপোর্ট এবং
- লাল পাসপোর্ট
আসুন জেনে নেই বাংলাদেশে কোন রঙ এর পাসপোর্ট কাদের জন্য । চলুন নিম্নে সেগুলি আমরা বিস্তারিত জানবো:👇
💚সবুজ পাসপোর্ট
এই পাসপোর্ট হচ্ছে বাংলাদেশের সকল সাধারণ নাগরিকদের জন্য।
জন্ম ও বৈবাহিক উভয় সূত্রে বাংলাদেশের সব নাগরিকের জন্য সবুজ পাসপোর্ট। এই রঙের পাসপোর্টে বিদেশে গমনের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের ভিসার প্রয়োজন হয়।
💙 নীল পাসপোর্ট
নীল রং এর পাসপোর্টকে বলা হয় অফিসিয়াল পাসপোর্ট। সরকারি কাজে কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী দেশের বাইরে ভ্রমণ করতে হলে এই অফিসিয়াল পাসপোর্ট ব্যবহার করা হয়।
এই পাসপোর্ট করার জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি অফিসের অনুমোদন বা গভর্নমেন্ট অর্ডার (জিও) প্রয়োজন হয়। এই নীল পাসপোর্টধারী ব্যক্তিরা অন্তত ২৭টি দেশে বিনা ভিসায় ভ্রমণ করতে পারবেন।
💓লাল পাসপোর্ট
👉👉লাল পাসপোর্টকে বলা হয় ডিপ্লোম্যাটিক বা কূটনৈতিক পাসপোর্ট।
এই পাসপোর্ট পাবেন রাষ্ট্রপ্রধান, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীসভার সদস্যগণ, সংসদ সদস্য এবং তাদের স্পাউস অর্থাৎ স্বামী বা স্ত্রী।
সেই সঙ্গে উচ্চতর আদালতের বিচারপতিগণ, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণ, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের প্রধান, মন্ত্রণালয়ের সচিবগণ এবং বিদেশে বাংলাদেশি মিশনের কর্মকর্তারা লাল পাসপোর্ট পান।
👉লাল পাসপোর্ট যাদের আছে, তাদের বিদেশ ভ্রমণের জন্য কোন ভিসা প্রয়োজন হয় না। তারা সংশ্লিষ্ট দেশে অবতরণের পর অন-অ্যারাইভাল ভিসা পান।
পাসপোর্ট করতে কত বছর বয়স লাগে
এখন প্রশ্ন হল পাসপোর্ট করতে কত বছর বয়স লাগে। তাহলে চলুন জেনে আসি পাসপোর্ট করতে কত বছর বয়স হতে হয় এই বিষয়ে। বাংলাদেশে অনেক মানুষ তাদের ইচ্ছে বা অনিচ্ছায় পাসপোর্ট করে রাখতে চায়। অবশ্য এই ব্যাপারটা ভালো দিক এবং মন্দ দিকদই রয়েছে। তবে একজন নাগরিক হিসেবে প্রত্যেকেই পাসপোর্ট করে রাখতে হবে।
পাসপোর্ট করতে একজন নাগরিকের যদি ১৮ বছরের কম বয়স হয় তাহলে সে পাঁচ বছরের জন্য করতে পারবে তার জন্ম নিবন্ধন ব্যবহার করে। যে জন্ম নিবন্ধন ১৭ ডিজিটের হয়ে থাকে। আবার যে সকল ব্যক্তির বয়স ৫৫ বছরের উপরে তারাও পাঁচ বছরের জন্য করতে পারবে। এবং তাদের ক্ষেত্রে আইডি কার্ডের প্রয়োজন হবে।
এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এটা যে যাদের বয়স ১৮ বছর থেকে উপরে এবং ৫৫ বছর বয়স পর্যন্ত ,তাদের জন্য পাসপোর্ট এর মেয়াদ ১০ বছর করা হয়েছে। এবং অবশ্যই তাদেরকে বাংলাদেশী নাগরিকত্ব থাকতে হবে। সেই ক্ষেত্রে আবেদনকারীকে তার জাতীয় পরিচয় পত্র প্রদর্শন করতে হবে।
পাসপোর্ট করার জন্য কি কি দরকার?
পাসপোর্ট করার জন্য প্রথমে আপনাকে কিছু ডকুমেন্ট ব্যবস্থা করতে হবে। অর্থাৎ আপনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র লাগবে যেগুলো ছাড়া আপনি পাসপোর্ট করতে পারবেন না। যে সকল ডকুমেন্ট লাগবে পাসপোর্ট করতে সেগুলো হচ্ছে।
জাতীয় পরিচয় পত্র অর্থাৎ ন্যাশনাল আইডি কার্ড
- অথবা ন্যাশনাল আইডি কার্ড না থাকলে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র
- আপনি কোন পেশায় আছেন তার প্রমান পত্র
- আপনার এলাকার চেয়ারম্যান কর্তৃক সার্টিফিকেট
- এবং অনলাইনে আবেদন করেছেন তার প্রিন্টেড কপি
- সেই আবেদনের সামারি দিতে হবে
- পাসপোর্ট এর জন্য যে ফি দিয়েছেন সেই ফি পরিষদের রশিদ
- এবং আরো কিছু ডকুমেন্টস প্রয়োজন পাসপোর্ট করার জন্য। সরকারি চাকরিজীবী যদি হয় থাকেন তাহলে এনওসি লাগবে।
পাসপোর্ট হতে কতদিন লাগে?
সাধারণত পাসপোর্ট হাতে আসতে বেশি সময়ের প্রয়োজন হয় না। নিয়মিত আবেদনের ক্ষেত্রে অনুরোধ হতে ২১ কর্ম দিবসের মধ্যে পাসপোর্ট সম্পন্ন রূপে রেডি হয়ে যায়। যদি কোন প্রশাসনিক কারণে অথবা অনলাইন সিস্টেম ম্যানেজমেন্ট এর কারণে দুই-একদিন পিছিয়ে যেতে পারে। তবে এই পাসপোর্ট অফিস সব সময় চায় ডেলিভারির নির্দিষ্ট তারিখের আগেই আবেদনকারীর হাতে পাসপোর্টটির তুলে দেওয়ার জন্য।
আবার যদি কেউ খুব জরুরী ভাবে পাসপোর্ট পেতে চায় তাহলে তাকে পাঁচ থেকে সাত দিন অপেক্ষা করতে হবে। আর খুবই অতীব জরুরি প্রয়োজনে অবশ্যই তাকে দুই কর্ম দিবস পরে তাকে পাসপোর্ট দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে এতটুকু সময় অবশ্যই দিতেই হবে। তাহলে আপনার কাঙ্খিত বস্তু আপনি হাতে পাবেন।
কোন রঙের পাসপোর্ট সবচেয়ে শক্তিশালী
যেত প্রশ্ন হচ্ছে কোন রঙের পাসপোর্ট সবচেয়ে শক্তিশালী তাই উত্তরটা হচ্ছে লাল রংয়ের পাসপোর্ট বাংলাদেশের সংবিধানে সবচেয়ে শক্তিশালী। কেননা লাল রংয়ের পাসপোর্ট শক্তিশালী হওয়ার পেছনে কিছু কারণ রয়েছে। আপনি হয়তো জেনে থাকবেন লাল রংয়ের পাসপোর্ট কে কূটনৈতিক পাসপোর্ট ও বলা হয়।
আর এই পাসপোর্ট সাধারণত প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপ্রধান, সংসদ সদস্য এবং তাদের স্ত্রী বা স্বামীদের কাছে থাকে। তাই বুঝতেই পারছেন এদিকে তো গুরুত্বপূর্ণ লোকজনের কাছে থাকে। আপনি জেনে খুশি হবেন যে এই লাল রংয়ের পাসপোর্ট এর আরেকটি কালার রয়েছে তা হলো মেরুন কালার।কূটনৈতিক দের জন্য মেরুন কালার পাসপোর্ট শক্তিশালী পাসপোর্ট।
লেখক এর মন্তব্য
বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমি একটি কথাই বলতে চাই যে প্রত্যেকেরই পাসপোর্ট করে রাখা উচিত। আর সেটা হতে হবে অবশ্যই বৈধ পাসপোর্ট আপনাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে প্রধান শর্ত এবং সেই সাথে আরও যেসব নিয়ম কানুন আছে সেগুলো থাকতে হবে।
এই রকম আরো মজার মজার তথ্য বা কনটেন্ট পেতে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকবেন। এবং এই পোস্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করবেন যাতে তারাও পাসপোর্ট সম্পর্কে কিছু জানতে পারে।
লেকচার বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url